আমার বাংলা
গ্ৰাম গঞ্জে
ভ্রমণ
Khirai : The Valley of Flowers, Bengal
!! ক্ষীরাই : বাংলার ফুলের উপত্যকা !!
হাওড়া খড়গপুর রেল লাইনে ক্ষীরাই একটি সাজানো গোছানো ছোট্ট রেলস্টেশন। ক্ষীরাই নামটা যতটা না সুন্দর, আশেপাশের সৌন্দর্য তার কয়েকশ গুন বেশি। রেলস্টেশনটির শেষ প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটি নদী, নদী না বলে খাল বলাই ভালো। ক্ষীরাই নদী, আর নদীর নামেই ষ্টেশনের নাম। বর্ষার জলে পুষ্ট নদী, তাই বর্ষা কাল ছাড়া জল থাকে না বললেই চলে। শীতকালে নদী চত্ত্বরে বসে যায় চড়ুইভাতি র আসর।।
আর এই ক্ষীরাই নদীর সংলগ্ন দুই পাশের চড়াতে কয়েকশ বিঘা জায়গা জুড়ে হচ্ছে ফুলের চাষ। যতদূর চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল। কতো রকমের যে ফুল কি বলবো, গাঁদা, চেরি, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, আরো কিসব ফুল। তবে গাঁদা ফুলের আধিপত্য সব থেকে বেশি নজরে পড়ল। ক্ষীরাই নদীর রেল ব্রীজের উপর থেকে দেখলে মনে হয় "কেউ যেন পুরো নদীর চরটা হলুদ ও সবুজের কার্পেট বিছিয়ে দিয়ে গেছে"। শান্ত, নির্জন জায়গা। কয়েক জন ফুল চাষী ব্যতীত কেউ কোথাও নেই। না আছে পর্যটক দের চিৎকার চেঁচামেচি, না আছে শহরের ব্যস্ততা, দূষণ, কোলাহল। আছে শুধু অপার শান্তি, চোখ জুড়ানো মনমুগ্ধকর দৃশ্য। যত কষ্ট হোক না কেন এখানে এলে মন ভালো হতে বাধ্য।
একবার ক্ষীরাই এসে গেলে ভাবতে পারেন Time Machine করে বোধহয় পৌঁছে গেছেন উত্তরাখণ্ডের বিখ্যাত ফুলোকি ঘাঁটি "Valley Of Flowers" এ। যদিও ধারে ভারে কোনো তুলনা চলে না। তবে আমাদের মতো ভ্রমণ পিপাসু যাদের পক্ষে "Valley Of Flowers" যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি, ওদের কাছে ক্ষীরাই হয়ে উঠতে পারে "ফুলের উপত্যকা"র মানসভ্রমন।।
যাতায়াত :- হাওড়া খড়গপুর রেল লাইনে পাঁশকুড়া ষ্টেশনের পর ক্ষীরাই ষ্টেশন। প্রায় সমস্ত লোকাল ট্রেন এখানে দাঁড়ায়।
থাকা ও খাওয়া দাওয়া :- ক্ষীরাই তে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। যদি থাকার অত্যন্ত দরকার মনে হয় তাহলে পাঁশকুড়াতে থাকতে পারেন। ষ্টেশন সংলগ্ন কয়েকটি দোকান আছে, টিফিন করতে পারেন। তবে ভালো ভাতের হোটেলের অভাব রয়েছে।
আরো কিছু :- এতদূর যখন এলেন তাহলে পাশের গোঁসাই জির মন্দির থেকে ঘুরে আসুন। রেল লাইন বরাবর মাত্র ১ কিমি দূরে। স্থানীয় দের কাছে খুব জাগ্ৰত দেবতা।
বিঃ দ্রঃ :- যেখানেই ঘুরতে যান না কেন ঐ জায়গায় কোন ময়লা ফেলে আসবেন না। এইসব জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।
No comments